মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চান্দহর ইউনিয়নের ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদীর মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের বাঘুলী গঙ্গালালপুর ও পালপাড়ার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী ও পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীর জায়গা থেকে মাটি বিক্রি করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দহর ইউনিয়নের আঁটিপাড়া গ্রামের মোঃ সিরাজ গংরা ধলেশ্বরী নদীর পালপাড়া এলাকায় ও ইসলামপুর এলাকার মোঃ সুমন কালীগঙ্গা নদীর পাড়ের মাটি বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত। তবে এই মাটি বিক্রির টাকার ভাগ পাচ্ছেন স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক নেতারা। সম্প্রতি ইসলামপুরের মাটি কাটায় অভিযানে জরিমানা করা হলেও আবারো কাটছে সেই মাটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের পালপাড়া মৌজার ধলেশ্বরী নদী এবং ইসলামপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে দিনের বেলায় মাটি কেটে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। ট্রাক ভর্তি মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায় ও ব্যক্তি মালিকানা জমি ভরাটের কাজে। এতে নদীর গতি পরিবর্তন, নদী ভাঙ্গন ও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি এসব মাটি বিক্রির সাথে রাজনৈতিক নেতারা জড়িত থাকায় প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তবে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। এসব মাটি বিক্রির সাথে সরাসরি পালপাড়া এলাকার মোঃ সিরাজ ও ইসলামপুর এলাকার মোঃ সুমন জড়িত। বিক্রি করা প্রতি ট্রাক মাটির একটি অংশ যায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে।
ইসলামপুর এলাকার মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি উপজেলা ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ করলে একবার বন্ধ করে দেন। পরে আবার আগের মতোই মাটি কাটছে। প্রশাসনকে মাটি কাটার কথা বারবার জানানো সত্বেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। এভাবে নদীর মাটি কাটলে নদী পাড়ের জমি ধ্বংস হয়ে যাবে।
স্থানীয় তারিকুর রহমান আলাল বলেন, সরকারি নদী থেকে মাটি কাটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। যে সকল রাজনৈতিক নেতারা এসব মাটি ব্যবসায়িদের সেল্টার দেয় তারা দলকে বিপদে ফেলছে। দ্রুত এদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
নদীর জায়গা থেকে মাটি কাটার কথা অস্বীকার করে অভিযুক্ত মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জায়গার সব কাগজ আছে। আমি কিনে নিয়েছি। ব্যক্তিগত জমি থেকে মাটি কাটছি। সরকারি নদী থেকে মাটি কাটি না।
সুমন জানান, কালীগঙ্গা নদী আরো দূরে। আমরা নিজেদের জায়গা থেকেই মাটি কাটছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদী থেকে মাটি কাটার খবর পেলেই আমরা অভিযান চালাই। মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।