মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রায় সাত থেকে আট মাস আগে নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে কটুক্তিকর কমেন্ট করেন। তবে পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি কমেন্ট কেটে ফেলেন। এর পর গত সোমবার ওই কমেন্ট ফেসবুকে নতুন করে ভাইরাল হলে শাকিল আহমেদ (২৪) আত্মহত্যা করেন।
মঙ্গলবার(১০ জুন) সকালে উপজেলার দক্ষিণ জামশা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত শাকিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও দক্ষিণ জামশা গ্রামের নাসিরুদ্দিন আহমেদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাত থেকে আট মাস আগে নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে কটুক্তিকর কমেন্ট করেন। তবে পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি কমেন্ট কেটে ফেলেন। এর পর গত সোমবার ওই কমেন্ট ফেসবুকে নতুন করে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে ফেসবুকে শাকিলকে নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি তাঁকে হুমকিধামকি দেন। গতকাল সোমবার রাতে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বাড়িতে গিয়ে শাকিলকে ও তাঁর পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেন। এর পর গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে বাড়িতে ঘরের ভেতর গলায় ফাঁস নিয়ে শাকিল আত্মহত্যা করেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম বলেন, আজ সকালে বাড়ি থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আত্মহত্যার আগে গতকাল সোমবার রাতে ফেসবুকে চারটি পোস্ট দিয়েছিলেন শাকিল। সর্বশেষ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি নাস্তিক নই, গ্রামের সবাই আমাকে নাস্তিক বলছে। আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে, আমি নবী মুহাম্মদকে কোনো কটূক্তি করিনি। আমাকে নিয়ে আমার বাবা অনেক গর্ব করত, গ্রামের সবাই আমাকে অনেক সম্মান করত। আজ আমি আমার নিজের আপন মানুষের কাছে আমার সম্মান হারিয়েছি। আগামীকাল আমার বাবাকে সবাই গালি দিবে, আমার মাকে সবাই অসম্মান করবে, এই লজ্জা আমি কখনো সহ্য করতে পারব না। একটা ছেলে হয়ে নিজের বাবা–মায়ের মানসম্মান আমি এভাবে নষ্ট করে দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে পারব না। কোনো দিন আমি গ্রামে মাথা তুলে চলতে পারব না। আত্মহত্যা মহাপাপ আমি জানি। আমি অনেক পাপ করেছি, আজ আর একটা শেষ পাপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।